আমাদের পৃথিবীতে তিন ভাগ জল (Water) আর এক ভাগ স্থল। পৃথিবীতে জলের পরিমাণ বেশি বলেই একে নীল দেখায়, তাই পৃথিবীকে নীল গ্রহ বলে। পৃথিবীতে এই বিপুল পরিমাণ জলের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন অনেকদিন ধরেই বিজ্ঞানীদের সামনে। পৃথিবী পৃষ্ঠের ৭১ শতাংশ জল দ্বারা আচ্ছাদিত হওয়া সত্ত্বেও, এর উৎস একটি রহস্যের বিষয়। গত কয়েক বছরে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুযায়ী, এই জল এসেছে গ্রহাণু থেকে বা পৃথিবী নিজস্ব জল তৈরি করেছে (Water Source Of Earth)। এখন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকরা এই রহস্য উদঘাটনে আরেকটি পদক্ষেপ নিয়েছেন।
বিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবী প্রাথমিকভাবে শুষ্ক এবং পাথুরে পদার্থ থেকে তৈরি হয়েছিল, যা থেকে বোঝা যায় যে, গ্রহে জল পরে এসেছে। সাম্প্রতিক কালে ভূ-পৃষ্ঠে আছড়ে পড়া উল্কাখণ্ডে জল প্রবাহের চিহ্ন অবাক করেছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। পৃথিবীতে পড়া উল্কাখণ্ডে জল প্রবাহের চিহ্ন দেখে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশের অনুমান, পৃথিবীতে প্রথম জল পৌঁছেছিল কোনো উল্কাই। বছর দুয়েক আগে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশ পৃথিবীতে প্রথম জল (Water Source Of Earth) নিয়ে আসার নেপথ্যে উল্কাখণ্ড বা উল্কাবৃষ্টির ভূমিকা থাকার একাধিক প্রমাণ পেয়েছিলেন।
আরো পড়ুন: কীভাবে এক কোপে দুটি আপেলকে তিনটি আপেল করতে পারবেন? কেবলমাত্র জিনিয়াস লোকেরাই পারবেন এর উত্তর
সিডনির ম্যাককুয়েরি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Macquarie University) জ্যোতির্বিজ্ঞানী সাইমন টার্নার ও তাঁর সহকারী বিজ্ঞানীদের দাবি, আজ থেকে প্রায় ৪৪০ কোটি বছর আগে এক বা একাধিক উল্কাখণ্ডই পৃথিবীতে জল বয়ে এনেছিল। সূচনায় পৃথিবী গ্রহটি অসম্ভব গরম ছিল। জলে ভরা উল্কাখণ্ডগুলি প্রায় ৪৪০ কোটি বছর আগে প্রচণ্ড উত্তপ্ত পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে। এর ফলে উল্কাখণ্ডগুলির ভেতরে থাকা জল বাষ্পীভূত হয়ে গিয়ে আকাশে মেঘের বিশাল ঘন স্তর সৃষ্টি করেছিল। ওই মেঘের কারণেই পৃথিবীতে প্রবল ঝড়, বৃষ্টি শুরু হয় এবং জলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে এই নীল গ্রহ অর্থাৎ পৃথিবী।
আরো পড়ুন: কেবলমাত্র ১% জিনিস লোকেরাই পারবেন বাঁদরের ভিড়ে থাকা ভাল্লুক’টিকে খুঁজে বের করতে, রইল চ্যালেঞ্জ!
পৃথিবীর তিন ভাগ জলে (Water) হাইড্রোজেন, ডয়টেরিয়ামের অনুপাত যতটা, ঠিক ততটাই অনুপাতে উল্কাগুলিতেও। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ৪৪০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে আছড়ে পড়া বিশেষ ধরনের উল্কাগুলিতে মিশে থাকা খনিজ আর জৈব পদার্থ থেকেই এই গ্রহে জলের সৃষ্টি হয়েছিল।