সারা ব্রহ্মাণ্ড জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এমন অনেক রহস্য যার হদিস আমরা কিছুই জানি না। গ্রহ, নক্ষত্র, ধূমকেতু, উপগ্রহ সহ আরো অনেক মহাজাগতিক বস্তু রয়েছে যার মধ্যে মাত্র কয়েকটির হদিস জানতে পেরেছি আমরা।
মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মাঝখানে ভেসে থাকা এমন একটি গ্রহানু (Asteroid)সম্পর্কে আজ আমরা বলবো যার কথা এতদিন আপনার কাছে ছিল অজানা। এই গ্রহানুটির মূল্য ভারতের মোট অর্থনীতির থেকেও বেশি। মঙ্গল এবং বৃহস্পতির মাঝে থাকা এই গ্রহানুটির নাম ১৬ সাইকি। ইতালীয় জ্যোতির্বিদ অ্যানিবেলে ডি গ্যাসপারিস ১৮৫২ সালের ১৭ মার্চ এই গ্রহাণুটি আবিষ্কার করেছিলেন।
আরো পড়ুন: শাহরুখ খানের পর এবার তালিকায় রয়েছে আমির সালমানের নাম, অ্যাটলির হাত ধরে তাহলে কী এবার ভাগ্য খুলতে চলেছে এই তারকাদের?
এই গ্রহানুটির নামকরণ করা হয়েছে গ্রিক দেবী “সাইকি”র নামে। মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত গ্রহানুগুলির মধ্যে সবথেকে বড় এই গ্রহাণুটি। এর গড় ব্যাস প্রায় ২২০ কিলোমিটার। কিন্তু এই গ্রহানুর দাম এত বেশি কেন সেটাই জানবো আমরা। আসলে এই গ্রহানুটির প্রায় সমগ্র অংশ তৈরি লোহা এবং নিকেল দিয়ে, শুধু তাই নয় বেশ কিছু অংশ সোনা দিয়ে তৈরি বলেও দাবি বিজ্ঞানীদের।
বিজ্ঞানীদের অনুমান, এই গ্রহাণুটির মূল্য প্রায় ১০ হাজার কোয়াড্রিলিয়ন ডলার, যেখানে সারা বিশ্বের অর্থনীতির মূল্য ৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার। সংখ্যার ভিত্তিতে হিসেব করতে গেলে দেখা যাবে বিশ্বের অর্থনীতির ১-এর পিঠে ৩১ টি শূন্য দিলে তবে এই গ্রহাণুটির মূল্য দাঁড়াবে।
কোন দেশ যদি এই বহুমূল্যে পাথরটি দখল করতে সক্ষম হয় তাহলে সম্পূর্ণ বিশ্বের অর্থনীতিকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলতে পারবে সেই দেশ। এই গ্রহাণুটির মোট মূল্য পৃথিবীর সমস্ত মুদ্রার ১ লক্ষ ৩৫ হাজার গুণ বেশি। লোহা নিকেল সোনা ছাড়াও এই গ্রহানুতে ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে হাইড্রক্সিল আয়ন থাকার প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
আরো পড়ুন: এগুলি হচ্ছে ভারতের সর্বোচ্চ আয়ের ঐতিহাসিক ভবন, এদের নাম জানলে আপনি গর্বিত বোধ করবেন
প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, ব্রহ্মাণ্ডের কোন নক্ষত্র ধ্বংস হয়ে এই গ্রহাণুটি আবিষ্কার হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই গ্রহটির কাছে মহাকাশ পাঠানোর পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে আমেরিকার মহাকাশ সংস্থা নাসা। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে নাসার উৎক্ষেপণ করা একটি ভারী রকেটের মূল মহাকাশযান এবং দুটি ছোট মহাকাশযান এই গ্রহানুটির দিকে উড়ে যাবে। ২০২৯ সালের আগস্ট মাসে মহাকাশযানটি এই গ্রহানুটির কাছাকাছি পৌঁছে যাবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। এই যাত্রা সফল হলে নিঃসন্দেহে নাসা মহাকাশে নিজেদের সফলতা আরও একবার প্রমাণ করতে পারবে।