চলন, বলন এমনকি কথার ধরন পৃথিবীর মতোই! অন্য এক সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে আর্থ ২.০, তাহলে কী সেখানেও রয়েছে প্রাণের অস্তিত্ব?

এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড নিয়ে আমাদের কৌতূহলের শেষ নেই। বিশাল এই ব্রহ্মাণ্ডে(Universe) রয়েছে বহু নক্ষত্র, গ্রহ, উপগ্রহ, ধূমকেতু। এত বড় ব্রহ্মাণ্ডে শুধুমাত্র পৃথিবীতেই কি প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে? এই প্রশ্নের সম্মুখীন বারবার হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। শুধুমাত্র পৃথিবী(Earth) কি একমাত্র গ্রহ যেখানে প্রাণের সঞ্চার ঘটেছে নাকি ব্রহ্মাণ্ডে আরও অনেক গ্রহ রয়েছে যেখানে মানুষেরই মত প্রাণ রয়েছে? এ কথার উত্তর এখনো না পাওয়া গেলেও ভিন গ্রহের প্রাণীদের সন্ধান বহুবার পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা (Earth 2.0)।

Earth 2.0 or Kepler-452b

এবার সেই গবেষণায় নতুন দিশা যুক্ত হল যখন বিজ্ঞানীরা খোঁজ পেলেন কেপলার ৪৫২ বি নামক একটি গ্রহের। এই গ্রহটির সঙ্গে পৃথিবীর প্রচুর সাদৃশ্য রয়েছে বলেই এটিকে “দ্বিতীয় পৃথিবী” বলে অভিহিত করছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর মতোই এই গ্রহ সূর্যের মতো অন্য একটি নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে।

আরো পড়ুন: এখনই থেমে থাকবে না ISRO, চাঁদের পর এবার লক্ষ্য সূর্য, আরো একটি ইতিহাস গড়ার পথে ভারত

আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা নিশ্চিত করেছেন, পৃথিবীর মতোই এই গ্রহটিও প্রাণীর বাসযোগ্য একটি গ্রহ। পৃথিবীর এই জমজ গ্রহের আরো একটি নাম রেখেছেন বিজ্ঞানীরা যেটি হল, আর্থ ২.০। এবার প্রশ্ন হল সত্যি কি এই গ্রহে প্রাণ রয়েছে? পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব কতখানি?

এবার জানুন কেপলার অভিযান কি?

কেপলার অভিযান হল পৃথিবীর মতো অন্য গ্রহের সন্ধান করা। মূলত যে গ্রহগুলিতে জলের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে সেগুলিকে নিয়ে গবেষণা করেন বিজ্ঞানীরা এবং খুঁজে বার করার চেষ্টা করেন পৃথিবীর মতো সাদৃশ্যসম কোন গ্রহ আছে কিনা।এই কেপলার অভিযানের সময় এই নতুন গ্রহটির খোঁজ পেয়েছিলেন নাসা নামক গবেষণা সংস্থা।

Earth 2.0 or Kepler-452b
কেপলার একটি মহাকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র যা চালু হয়েছিল ২০০৯ সালে। এই কেন্দ্রটি অত্যাধুনিক ফটো মিটার ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই বহু গ্রহ আবিষ্কার করেছে যা অনেকটাই পৃথিবীর মতো। এখনো পর্যন্ত এই মহাকাশযান প্রায় ১ হাজারের বেশি, এক্সপ্ল্যানেট খুঁজে পেয়েছে, যার মধ্যে এমনও গ্রহ রয়েছে যা দুটি নক্ষত্রকে একসঙ্গে প্রদক্ষিণ করছে।

আরো পড়ুন: বিনিয়োগের মামলায় ভারতের সেরা উত্তরপ্রদেশ, দ্বিতীয় নম্বরে গুজরাট! জানুন তালিকায় কত নম্বরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের স্থান

২০১৫ সালে জুলাই মাসে কেপলার ৪৫২ বি নামক একটি গ্রহ খুঁজে বের করে নাসা, যার সঙ্গে পৃথিবীর সাদৃশ্য তো রয়েছে বটেই পাশাপাশি এই গ্রহটি সূর্যের সঙ্গে মিল থাকা একটি নক্ষত্রে চারিপাশে পাক খাচ্ছে। গ্রহটি পৃথিবীর থেকে প্রায় ৬০ শতাংশ বড়। পৃথিবী যেমন ৩৬৫ দিনে সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে ঠিক তেমনি এই গ্রহটি নিজের নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে ৩৮৫ দিনে।

এই গ্রহটি যে নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করছে তার আকার সূর্যের থেকে ১০ শতাংশ বড়। তাপমাত্রা ও কিছুটা বেশি সূর্যের থেকে। সূর্যের থেকে প্রায় ১৫০ কোটি বছর বড় নক্ষত্রটি। পৃথিবীর মতো সাদৃশ্যসম গ্রহটি সৌরজগৎ থেকে ১,৪০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ফলে এখনই সেখানে বিজ্ঞানীদের পৌঁছানোর কোন উপায় নেই। তবে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস অনুযায়ী এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতেও পারে কিন্তু তা প্রমাণ করার এখনই কোন উপায় নেই।