কেদারনাথের (Kedarnath) পাশাপাশি মহাদেবের অন্যতম প্রধান তীর্থস্থান হল অমরনাথ(Amarnath)। চার ধামের অন্য এক ধাম হলো এই অমরনাথ। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ মহাদেবের দর্শন করার জন্য ছুটে আসেন অমরনাথে। বরফ দিয়ে তৈরি শিব শংকরের লিঙ্গ দেখে অসীম কৃপা লাভ করেন প্রত্যেকে। অমরনাথ গুহায় যে বরফের শিবলিঙ্গটি দেখতে পাওয়া যায় সেটি কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি হয়ে যায় প্রতিবছর।
অমরনাথ গুহা দক্ষিণ কাশ্মীরের (Kashmir) হিমালয়ে অঞ্চলে অবস্থিত যেটি শ্রীনগর থেকে প্রায় ১৪১ কিলোমিটার দূরে এবং ৩৮৮৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। আজ এই অমরনাথ সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য আপনাদের কাছে তুলে ধরবো যা শুনে আরো একবার মহাদেবের প্রতি আপনার ভক্তি বেড়ে যাবে।
গুহার দৈর্ঘ্য: অমরনাথ গুহার দৈর্ঘ্য ১৯ মিটার লম্বা এবং ১৬ মিটার চওড়া। আধ্যাত্মিক মত অনুসারে অনেকেই বিশ্বাস করেন, এটি সেই গুহা যেখানে শিব মা পার্বতীকে অমরত্বের জ্ঞান দিয়েছিলেন। এখানে মাতার গলার অংশ পড়েছিল তাই এটিকে ৫১ শক্তিপীঠের অন্যতম শক্তিপীঠ হিসেবে গণ্য করা হয়।
আরো পড়ুন: মুখোমুখি টক্করে টাটা বনাম আম্বানি! রতন টাটাকে টেক্কা দিতে এবার কোমর বেঁধে মাঠে নামছেন মুকেশ কন্যা ইশা আম্বানি
শুধুমাত্র বরফের শিবলিঙ্গ: কাশ্মীরে অসংখ্য ধর্মীয় তীর্থস্থান রয়েছে কিন্তু এই তীর্থস্থান সব থেকে অনন্য এবং অদ্ভুত। কথিত রয়েছে, যে ব্যক্তি কাশীতে (Kashi) শিবলিঙ্গ দর্শন করে সে ১০ গুণ ফল লাভ করে কিন্তু যে ব্যক্তি অমরনাথ বাবার দর্শন করে সে ১০০ গুণ বেশি ফল লাভ করে। কাশ্মীরের শাসক শিবের একজন মহান ভক্ত ছিলেন তিনি নিজে বরফের তৈরি শিবলিঙ্গ পুজো করতেন। কাশ্মীর ছাড়া পৃথিবীর কোথাও বরফের শিবলিঙ্গ দেখতে পাবেন না আপনি।
বাবার উচ্চতা পরিবর্তিত হয়: অমরনাথে যে বরফের শিবলিঙ্গ আমরা দেখতে পাই তা চাঁদের আকার অনুযায়ী কমতে থাকে এবং বাড়তে থাকে। অর্থাৎ যখন পূর্ণিমা থাকে, তখন শিবলিঙ্গ তার পূর্ণ আকারে থাকে এবং অমাবস্যার দিন শিবলিঙ্গে রাখার কিছুটা কমে যায়। অমাবস্যার দিন শিবলিঙ্গে অবিরাম তুষার ফোঁটা পড়তে দেখা যায়।
অমরনাথ গুহার ইতিহাস: এই গুহাটি বুট্টা মালিক নামে এক রাখাল আবিষ্কার করেছিল। মেষপালক বুট্টা ভেড়া চড়াতে গিয়ে অনেক দূরে পৌঁছে যান এবং সেখানে তিনি এক সন্ন্যাসীর দেখা পান। সেই সন্ন্যাসী মেষ পালকে একটি কয়লা ভর্তি ব্যাগ দিয়েছিলেন, যা বাড়িতে এসে সোনায় রূপান্তরিত হয়ে যায়। এত সোনা দেখে বুট্টা আবার সন্ন্যাসীকে খুঁজতে যান কিন্তু তিনি সন্ন্যাসীকে পান না বরং পান অমরনাথ গুহাকে। তখন থেকেই এই স্থানটি তীর্থস্থান রুপে পরিবর্তিত হয়ে যায়।
আরো পড়ুন: দক্ষিণের এই ৫ সুপারস্টারের পড়াশোনার দৌড় দেখে লজ্জা পাবে একাধিক বলিউড তারকা
অমরনাথ গুহার কিংবদন্তি: ধর্মীয় মত অনুযায়ী, এই গুহায় ভগবান শিব মা পার্বতীকে অমর কাহিনী বর্ণনা করছিলেন। এই কাহিনী বর্ণনা করার সময় পাঁচ তত্ত্ব অর্থাৎ বায়ু, জল, পৃথিবী, আকাশ এবং আগুন ছাড়া আর কেউ এই বর্ণনা শুনতে পায়নি। তবে এই গোপন কথা শুনেছিল শুধুমাত্র শুক অর্থাৎ পায়রা, পরে শিবের আশীর্বাদে ওই শুক শুকদেব ঋষি নামে পরিচিত হয়।