ভগবান শ্রী বিষ্ণুর অন্যতম অবতার শ্রী কৃষ্ণের (Shri Krishna) লীলাখেলার কথা নতুন করে আর কি বলবো। তবে শ্রীকৃষ্ণের কথা বলতে গেলে রাধিকার কথা বলতেই হয়। শ্রীকৃষ্ণের জীবন অথবা লীলাখেলা সবকিছুই রাধা(Radha) ছাড়া অসম্পূর্ণ। শ্রীকৃষ্ণের জীবনের সবথেকে প্রিয় জিনিস ছিল বাঁশি এবং রাধা। কৃষ্ণের বাঁশির সুমধুর শব্দে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসত পশুপাখি থেকে মানুষজন সকলেই।
শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধার প্রেম পরিপূর্ণতা পায়নি ঠিকই কিন্তু আজও সারা বিশ্ব সংসারে এই প্রেম সর্বপূজনীয়। আজ আমরা জানব শ্রীকৃষ্ণের রাধার বিরহের সেই কাহিনী এবং জানবো শ্রীকৃষ্ণ কেন নিজের সবথেকে প্রিয় বাঁশি ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন? ছোট থেকেই কৃষ্ণ এবং রাধিকা একই সঙ্গে বড় হয়েছিলেন কিন্তু যখন মামা কংস শ্রীকৃষ্ণ এবং বলরামকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নিজের রাজ্যে, তখন প্রথমবার শ্রীকৃষ্ণ রাধিকার থেকে আলাদা হয়েছিলেন।
আরো পড়ুন: OTT প্লাটফর্মে উঠবে ঝড়! সুস্মিতা আলিয়া থেকে রাজকুমার তারকাদের দীর্ঘ তালিকায় থাকবে বড় চমক
বৃন্দাবন থেকে মথুরার দিকে যাত্রা করার সময় শ্রীকৃষ্ণ রাধিকাকে কথা দিয়েছিলেন, তিনি নিশ্চয়ই শ্রী রাধিকার কাছেই ফিরে আসবেন এবং রাধাও বলেছিলেন, শ্রীকৃষ্ণ তার থেকে যতই দূরে চলে যান না কেন তার হৃদয় সর্বদা বিরাজমান হবেন। কৃষ্ণের বৃন্দাবন ছাড়ার পর অনেক ঘটনাই ঘটে যায় মথুরায়। রাধিকাকে আয়ান ঘোষের স্ত্রী হতে হয়। কৃষ্ণকে হৃদয়ে রেখে স্ত্রী হিসাবে সব কর্তব্যই পালন করতেন রাধা।
এইভাবে বেশ কিছু বছর চলার পর রাধারানী কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে রওনা হন দ্বারকায়। ইতিমধ্যেই কৃষ্ণ রুক্মিণী এবং সত্যভামাকে বিয়ে করেছেন। কৃষ্ণের বিয়ের খবর শুনে রাধা কৃষ্ণের সঙ্গে সাক্ষাৎ হেতু পৌঁছে যান দ্বারকা নগরীতে। দ্বারকায় রাধাকে কেউ চিনত না, ফলে তিনি শ্রীকৃষ্ণের প্রাসাদের সেবিকা হিসেবে নিযুক্ত হলেন।
আরো পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দামি এই ৫ টি সম্পত্তির মালিক মুকেশ আম্বানি, যা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে করেছেন হাসিল
প্রাসাদে শ্রীকৃষ্ণকে দেখতে পেলেও সেই ভাবে আধ্যাত্মিক অনুভব করতে পারতেন না রাধা। একসময় তিনি প্রাসাদ থেকে দূরে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। শ্রীকৃষ্ণ রাধারানীর এই চলে যাওয়ার কথা জানতেন ফলে তিনিও রাধারানীকে অনুসরণ করেন। বহুদূর যাত্রা করার পর রাধা এক সময় খুব একাকী এবং দুর্বল হয়ে পড়েন এবং ঠিক সেই সময় রাধার সামনে এসে দাঁড়ান শ্রীকৃষ্ণ।
রাধারানী শ্রীকৃষ্ণের কাছে অনুরোধ জানান যেন শ্রীকৃষ্ণ তাকে একবার বাঁশি বাজিয়ে শোনান। রাধার কথা রাখতে শ্রীকৃষ্ণ বাঁশি বাজাতে শুরু করেন কিন্তু সুমধুর বাঁশির সেই শব্দ সহ্য না করতে পেরে শেষ পর্যন্ত রাধা দেহত্যাগ করে মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যান। রাধার মৃত্যু সহ্য না করতে পেরে রাগে অভিমানে কৃষ্ণ নিজের সবথেকে প্রিয় বাঁশিটি ছুঁড়ে ফেলে দেন।