ভারত মহাসাগরের বুকেই রয়েছে দৈত্যাকার গহ্বর যেখানে দুর্বল মাধ্যাকর্ষণ শক্তি, এতদিনে জানা গেল সৃষ্টির রহস্য

আমাদের পৃথিবীর (Earth)মধ্যে এমন অনেক স্থান রয়েছে যার উৎপত্তিস্থল বা যার অস্তিত্ব সম্পর্কে অনেক কৌতূহল থাকা সত্ত্বেও বা এই সমস্ত স্থান নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকা সত্ত্বেও তার সমাধান করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। ভারত মহাসাগরের (Indian Ocean) বুকে লুকিয়ে রয়েছে এমন একটি বিশাল গহ্বর ,যার উৎপত্তি বা বৃত্তান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বহুবার।

Gravity Hole

ছোট থেকেই আমরা জানি পৃথিবীর আকৃতি কমলালেবুর মত অর্থাৎ ওপর আর নিচে অল্প চ্যাপ্টা। পুরোপুরি গোল নয়। কিন্তু আপনি কি জানেন এমন ধারণা আসলে ভুল। পৃথিবীর বহির্ভাগ উঁচু নিচু এবং বন্ধুর, যার প্রকিষ্ঠ উদাহরণ ভারত মহাসাগরের বুকে লুকিয়ে থাকা এই বিশাল গহ্বর (Gravity Hole) । শ্রীলঙ্কার ঠিক দক্ষিণে অবস্থিত এই বিশাল গর্তটি বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় পরিচিত ইন্ডিয়ান ওশান জিওয়েড লো নামে। একে বলা হয় অভিকর্ষীয় গহ্বর অথবা গ্রাভিটি হোল। আয়তন প্রায় ৩০ লক্ষ বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি।

আরো পড়ুন: ২৮ কিংবা ৩০ নয় এবার ৩৫ দিনের দুর্দান্ত ভ্যালিডিটি সহ রিচার্জ প্ল্যান নিয়ে হাজির Airtel

ভারত মহাসাগরের যে স্থানে এই বিশাল গর্তটি রয়েছে, সেখানে সমুদ্রের জলস্থার ১০০ মিটারেরও নিচে থাকে গোটা বিশ্বের তুলনায়। এই স্থানে পৃথিবীর অভিকর্ষ বল অত্যন্ত দুর্বল হয়ে থাকে। কিন্তু ভারত মহাসাগরে কিভাবে এই গর্ত তৈরি হলো তার সম্ভাব্য কারণ এতদিনে খুঁজে বের করেছেন দুই ভারতীয় বিজ্ঞানী।

Gravity Hole

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের ভূবিজ্ঞান বিভাগের বিষয়ক দেবাঞ্জন পাল এবং আত্রেই ঘোষ দাবি করেন, মেসোজয়িক জুগে লরেশিয়া এবং গোণ্ডয়ানা উপমহাদেশের মধ্যবর্তী স্থানে ছিল টেথিস মহাসাগর। পরবর্তীকালে স্থলভাগ যখন জুড়ে যায় তখন মহাসাগরের অবলুপ্তি ঘটে। প্রায় দুই কোটি বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলেছিল। টেথিস মহাসাগর যখন পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করে ঠিক তখনই একটি চাপের সৃষ্টি হয়, যার ফলে মহাসাগরের কিনারা বরাবর উঠে আসে গলিত শিলা, লাভা এবং ছাই। ফাঁকা হয়ে যেতে থাকে মধ্যিখানের কিছু অংশ (Gravity Hole)।

আরো পড়ুন: চাপ বাড়তে চলেছে একাধিক চীনা সংস্থার, মাত্র ১০ হাজার টাকার 5G ফোন আনতে চলেছে মুকেশ আম্বানির সংস্থা

গোটা প্রক্রিয়াটি প্রায় ২ কোটি বছর ধরে চলেছিল। এতদিন ওই জায়গায় অভিকর্ষ বল দুর্বল কেন তা বিচার করতে এতটাই ব্যস্ত ছিলেন বিজ্ঞানীরা যে গহ্বরের সৃষ্টিতত্ত্বের দিকটি সেভাবে খতিয়ে দেখা হয়নি। ভারত মহাসাগরের বুকে লুকিয়ে থাকা এই গর্তটি আবিষ্কৃত হয় ১৯৪৮ সালে, যা আবিষ্কার করেন ওলন্দাজ ভূবিজ্ঞানী ফিলিক্স ভেনিং মিনেজ। কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে এই বিশাল গর্তটির অবস্থান এবং আয়তন নির্ধারণ করা হয়েছিল কিন্তু গর্তটি কেন তৈরি হয়েছিল বা এই গর্তটি সৃষ্টির পেছনে কি কারন ছিল তা নিয়ে এতদিন দ্বন্দ্ব ছিল সকলের মধ্যে, যা এত বছর পর পরিষ্কার হয়।