খলনায়ক হিসেবে নিজের পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন মুকেশ সিংহ ঋষি(Mukesh Singh Rishi)। নামের মতই গঠন ছিল তাঁর। ৯০-এর দশকে একজন নামি খলনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তিনি। তিন দশকের বেশি সময় ধরে বলিউডে(Bollywood) প্রায় ১০০ টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন অভিনেতা মুকেশ।
প্রথম খলনায়কের(Villain) চরিত্রই অভিনয় করে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মুকেশ। অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র থেকে শুরু করে সানি দেওল, গোবিন্দা এমনকি হৃত্বিক রোশনের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন মুকেশ। তবে বলিউডের প্রায় প্রত্যেক অভিনেতার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করলেও কোন বন্ধু খুঁজে পাননি তিনি।
আরো পড়ুন: কেবলমাত্র জিনিয়াস লোকেরাই পারবেন ৫ সেকেন্ডের মধ্যে পাহাড়ের মাঝখানে লুকিয়ে থাকা মহিলা ও শিশুটিকে খুঁজে বের করতে
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে মুকেশ বলেন, বলিউডে কখনোই কোন তারকার সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেনি তার। চিরকাল ঊর্ধ্বতন তারকাদের চোখে দেখেছেন তিনি, তাদের কখনোই বন্ধু বলা যায় না। শুটিং-এর পর যখন অন্যান্য তারকারায় একসঙ্গে বসে মদ্যপান করতেন তখন তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যেতেন।মুকেশের বক্তব্য, তারকা পার্টি হলে তার যে ডাক আসত তা নয়, তবে তিনি যেতেন না। কোন দলে অংশগ্রহণ করতে ভালো লাগত না তাঁর। তবে সেই ভাবে বন্ধুত্ব না গড়ে উঠলেও আমির খান থেকে শুরু করে সোহেল খান, সকলের সঙ্গেই হৃদ্যতা রয়েছে মুকেশের।
১৯৫৬ সালের ১৯ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরে জন্মগ্রহণ করেন এই অভিনেতা। কলেজ পাশ করেন চন্ডিগড়-এর একটি কলেজ থেকে। তারপর সোজা চলে আসেন মুম্বাই। মুম্বাইতে একটি পাথর ভাঙার কারখানায় কর্মী হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। দু’বছর পর কাজের উদ্দেশ্যেই তিনি চলে যান ফিজিতে। বলাই বাহুল্য, সেখানেই জীবন অন্য মোড় নিয়ে নেয় মুকেশের। ফিজিতে মুকেশের সঙ্গে আলাপ হয় কেশনী নামে এক মহিলার।
আরো পড়ুন: একবার স্থির তো একবার চলমান, ছবিটি দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে আপনার
কেশনীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফিজিতে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর চালাতেন তিনি। আর্থিক বিনিয়োগের মাধ্যমে সেখানে ভালই রোজ শুরু করেছিলেন মুকেশ। এরপর কেশনীকে বিয়ে করে ফিজি থেকে নিউজিল্যান্ডে চলে যান মুকেশ। নিউজিল্যান্ডে মডেল হিসেবে পেশা শুরু করলেও সন্তুষ্ট ছিলেন না তিনি। প্রায় সাত বছর পর আরো একবার ভারতে ফিরে আসা সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
মুম্বাইতে এসে পরিচালক রোশন তানেজার অভিনয় প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হন মুকেশ। ১৯৯০ সালে “দ্যা সোর্ড অফ টিপু সুলতান”, ধারাবাহিক অভিনয় করে প্রথম অভিনয় জগতে পদার্পণ করেন মুকেশ। এরপর ১৯৯২ সালে “গন্ধর্ভম” নামক একটি মালায়ালাম সিনেমায় অভিনয় করে কিছুটা পরিচিতি লাভ করেন অভিনেতা।
১৯৯৩ সালে যশ পরিচালিত “পরম্পরা” সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর রাতারাতি সেলিব্রেটি হয়ে যান মুকেশ। এই সিনেমায় সুনীল দত্ত, আমির খান, সাইফ আলী খান, রবীনা ট্যান্ডন, বিনোদ খান্নার মতো বলেই তারকারা অভিনয় করেছিলেন। প্রথম সিনেমাতেই খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছিলেন তিনি। এরপর বাজি, জুড়ুয়া, গুন্ডা, সারফারোস, পুকার, কোই মিল গিয়া, খিলাড়ি ৭৮৬ এর মত বহু হিন্দি সিনেমায় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি।
হিন্দি সিনেমা ছাড়াও তেলেগু, মালায়ালাম, পাঞ্জাবি,ভোজপুরি, তামিল, মারাঠি এবং কন্নড় সিনেমায় অভিনয় করে পরিচিতি গড়ে তোলেন তিনি। তবে একসময়ের এই ডাকসাইটে খলনায়ক আজ বড় পর্দায় ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করলেও তেমনভাবে আর বলিউড জগতের সঙ্গে যুক্ত নন।