শুধু দেশেই নয় বিদেশেও রয়েছে এই গাছের কাঠের চাহিদা একবার চাষে করতে পারবেন মোটা মুনাফা

কৃষি (Agriculture) হলো দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড। বৃহৎ জনগোষ্ঠী তাদের দৈনন্দিন জীবন চালাতে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। গম, ভুট্টা, ধান, তৈলবীজ, ডাল প্রভৃতি হলো ঐতিহ্যবাহী ফসল। চাষীরা এই ফসলের বীজ বপন করে আয় করেন। উদ্যান ফসল থেকেও কৃষকরা লাখ লাখ টাকা আয় করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঐতিহ্যবাহী ফসল ছাড়াও কৃষকরা লাখ লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করতে পারেন। আজ আমরা এমনই একটি গাছ চাষ সম্পর্কে বলতে চলেছি, যা চাষ করে আপনি ১ একরে আয় করতে পারেন ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই সম্পর্কে কিছু কথা।

Business Idea
দেশে পপলার গাছ (Poplar Tree) চাষের প্রবণতা বেড়েছে। এর চাহিদা শুধু দেশেই নয়, সারা বিশ্বে। এই গাছের কাঠ বাজারে ভালো দামে বিক্রি হয়। পপলার গাছের জন্য উর্বর দোআঁশ মাটি থাকা প্রয়োজন। চারা রোপণের আগে কমপক্ষে ২ বার জমি চাষ করুন। জৈব উপাদান যুক্ত চাষের ক্ষেত্রে গাছ বপন করলে চাষাবাদ ভালো হয়। ক্ষারীয় প্রকৃতির মাটিতে পপলার গাছ বপন করা উচিত নয়। জমির পিএইচ মান ৫.৮ থেকে ৮.৫এর মধ্যে হওয়া উচিত। এর বপনের জন্য তাপমাত্রা ১৮ থেকে ২০ ডিগ্রি হওয়া উচিত। পপলার গাছগুলি সর্বোচ্চ ৪৫ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। পপলার গাছের শিকড় গভীর। এই গাছ চাষের পর জমিতে জল ছেড়ে দিন।

আরো পড়ুন: ভারত মহাসাগরের বুকেই রয়েছে দৈত্যাকার গহ্বর যেখানে দুর্বল মাধ্যাকর্ষণ শক্তি, এতদিনে জানা গেল সৃষ্টির রহস্য

জল (Water) ছাড়ার পর রোটাভেটর দিয়ে দুই থেকে তিনবার ক্ষেত লাঙ্গল করতে হবে। এরপর মেশিন দিয়ে মাঠ সমান করুন। মাঠে সারি প্রস্তুত করার সময় ৫ মিটার দূরত্ব থাকতে হবে। ৫ থেকে ৬ মিটার দূরত্বে প্রস্তুত এক মিটার গভীর গর্তে চারা রোপণ করুন। পপলার গাছ জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভালো থাকে। পপলার রোপণের জন্য ১৫ই ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ই মার্চ পর্যন্ত সময়কাল উত্তম এবং এটি ফেব্রুয়ারির শেষে ও মার্চের শুরুতে রোপণ করা হয়। এই গাছটি চাষ করে ১ একরে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। পপলার গাছ খুব একটা ব্যয়বহুল নয়, কিন্তু বিক্রির ক্ষেত্রে এর দাম অনেক বেশি।

Business Idea

৫ থেকে ৬ বছরে এই গাছ (Tree) চাষ করে লাভ পাবেন। তথ্য অনুযায়ী, ১ একরে তিন হাজার গাছ লাগানো যায়। ৭ বছর পর এসব গাছ বিক্রি করে আয় করতে পারবেন প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। এতে আপনার ২০ লাখ টাকা খরচ হলেও এক কোটি টাকা লাভ হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পপলার গাছের কাঠের দাম প্রতি কুইন্টাল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এক হেক্টরে ২৫০টি গাছ লাগানো যায়। একটি গাছের গড় উচ্চতা প্রায় ৬০ থেকে ৮০ ফুট। ১হেক্টরে পপলার গাছ থেকে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। উত্তরপ্রদেশের বিজনোরের বিপুল সংখ্যক কৃষক পপলার চাষের সাথে জড়িত। এখান থেকে দেশ ও বিদেশে পপলার পাঠানো যায়। আপনি আপনার ইচ্ছা মত এটি বিক্রি করতে পারেন।

আরো পড়ুন: কেউ লিভার, কেউ কিডনি আবার কেউ চোখ! বলিউডের এই তারকরা মৃত্যুর পর নিয়েছেন নিজেদের অঙ্গ দান করার সিদ্ধান্ত

জনপ্রিয় গাছের কাঠ (Wood) খুব হালকা, যার কারণে এটি হালকা জিনিস তৈরিতে খুবই উপকারী। এ ছাড়া অনেক ধরনের প্লাইউড, দরজা, বোর্ড, বাণিজ্যিক ও ঘরোয়া আসবাবপত্র এবং স্থাপনার উপকরণ তৈরি করা হয়। বিদেশে এর কাঠের চাহিদা থাকায় প্রচুর রপ্তানি হয়। কাঠের সাজসজ্জার সামগ্রী, ম্যাচস্টিক, ক্রিকেট ব্যাট, উইকেট, ক্যারামবোর্ড এবং বল, ম্যাচস্টিক ইত্যাদিও এটি থেকে তৈরি করা হয়। দেশে উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও বিহারের হাজার হাজার কৃষক জনপ্রিয় গাছটি চাষ করে বিপুল অর্থ উপার্জন করছেন।